1. admin@dainikjanatarkhobor.com : admin :
  2. rashedulislam.cu1981@gmail.com : Md. Rashedul Islam : Md. Rashedul Islam
  3. rimedia089@gmail.com : Rafiqul Islam : Rafiqul Islam
সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:০৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
রাজশাহীতে ছুরিকাঘাতে শ্রমিক সংগঠনের কর্মী নিহত জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে শ্বাসরুদ্ধ করে এক নারীকে হত্যা কুলিয়ারচরে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে নবাগত জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সৈয়দপুরের গর্ব মারুফা পেলেন বিকেএসপি থেকে’লিজেন্ডারি খেলোয়াড় সম্মাননা  দুঃস্থ নারী– পরিবারগুলোর নীরব হতাশা ও মানবেতর জীবন রংপুর জেলা পুলিশ লাইনে বিশেষ রোল কল গ্রহণ জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ীতে পালিত হলো দুর্নীতি বিরোধী দিবস টুঙ্গিপাড়ায় দিনে-দুপুরে ছিনতাই ও হামলার শিকার, থানায় অভিযোগ হ্ণীলা মাছবাহী ট্রাক ও সিএনজি অটোরিক্সার মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ ২ নিহত ক্ষমতার জোরে অত্যাচারের অভিযোগ: পুলিশ কনস্টেবল রেজাউলকে নিয়ে পরিবারের সংবাদ সম্মেলন ইসলামপুরে

দুঃস্থ নারী– পরিবারগুলোর নীরব হতাশা ও মানবেতর জীবন

প্রতিবেদকের নাম
  • Update Time : শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৭৭ সময় দেখুন

দুঃস্থ নারী– পরিবারগুলোর নীরব হতাশা ও মানবেতর জীবন

থানচি,প্রতিনিধি
বান্দরবান, পার্বত্য জেলা।
১২ ডিসেম্বর ২০২৫খ্রী:
বান্দরবানের থানচি উপজেলার দুঃস্থ নারী–পরিবারগুলো নীরব হতাশা ও মানবেতর জীবনযাপন করছেন। উপজেলার ৪ ইউনিয়নে ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট (ভিডব্লিউবি) ও ভিজিডি কর্মসূচির উপকারভোগী নারীরা অভিযোগ করেছেন—সঞ্চয় আমানতের টাকা এক বছর অতিবাহিত হলেও ফেরত পাননি। এছাড়া পরিবহন খরচের নামে অতিরিক্ত ৫০ টাকা করে আদায়ের অভিযোগও উঠেছে।
মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের যোগসাজশে ‘ম্যানুয়াল (হস্তচালিত) পদ্ধতিতে’ সঞ্চয়ের টাকা ব্যবহারের ফলে প্রায় ১ হাজার ৬৭৪ দুঃস্থ নারী উপকারভোগী এখন চরম হতাশা, মানসিক চাপ ও অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
সঞ্চয় আমানত ব্যাংকে জমা দেওয়ার কথা—মানা হয়নি নির্দেশনা
উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়—২০১৪ সাল থেকে ভিডব্লিউবি–ভিজিডি কর্মসূচির আওতায় ৪ ইউনিয়নের ১৬৭৪ পরিবারকে মাসিক ৩০ কেজি করে পুষ্টি খাদ্য চাল দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি সঞ্চয় আমানত হিসেবে প্রথমে মাসে ২০০ টাকা, পরে তা বৃদ্ধি করে ২২০ টাকা নেয়া হয়। রেমাক্রী ৪২৪, তিন্দু ৪৩০, থানচি ৪২০ এবং বলিপাড়ায় ৪০০—মোট ১৬৭৪ পরিবার তালিকাভুক্ত।
সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী এই সঞ্চয় সরকার অনুমোদিত ব্যাংকের সেন্ট্রাল অ্যাকাউন্টে অথবা এনবিএফআই-এর নিরাপদ অ্যাকাউন্টে জমা রাখার কথা। কিন্তু কোনও ইউনিয়নেই এই নিয়ম মানা হয়নি। বরং সঞ্চয় স্থানীয়ভাবে ‘হস্তচালিতভাবে’ ব্যবহার করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মেয়াদ শেষে অন্যের কাছ থেকে ধার করে টাকা ফেরত দেওয়ার অনিয়মিত পদ্ধতি অনুসরণের কারণে এখন উপকারভোগীরা তাদের আমানত ফেরত পাবেন কি না—তা নিয়ে গভীর শঙ্কায় আছেন।
চেয়ারম্যানের দাবি—টাকা অফিস সহকারী এমরানের হাতে দেওয়া হয়েছিল
বলিপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াঅং মারমা জানান, ২০১৬ সাল থেকে সঞ্চয় টাকা নগদভাবে মহিলা বিষয়ক কার্যালয়ের অফিস সহকারী এমরান হোসেন সংগ্রহ করতেন। তিনি বলেন—
“দুই বছর মেয়াদ শেষে পুরো টাকা সংগ্রহ করে এমরান হোসেনকে দিয়েছি। হঠাৎ এমরানের মৃত্যুতে সব জটিলতা তৈরি হয়েছে। রিসিভিং ডকুমেন্ট রাখিনি।”
চেয়ারম্যান দাবি করেন—২০২৩–২৪ চক্রের ৩৫০ জন উপকারভোগীর কাছ থেকে সংগৃহীত ১৮ লাখ ৪৮ হাজার টাকা তিনি এমরান হোসেনকে নগদ দিয়েছেন।
অফিস সহকারী এমরান হোসেন ২০ সেপ্টেম্বর বান্দরবান হাসপাতালে স্ট্রোক করে মারা যান।
এমরান হোসেনের স্ত্রীর অভিযোগ—চাপ দিয়ে কাগজে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে
তার সহধর্মীনি রুমা আক্তার বলেন—
“স্বামী মারা যাওয়ার শোক এখনো কাটেনি। কিন্তু চার ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা দাবি করছেন—৭০ লাখ টাকা স্বামী নিয়েছেন। প্রমাণ হিসেবে নোটবুকে নকল স্বাক্ষর দেখানো হয়। আমাকে চাপে ফেলে বিভিন্ন কাগজে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে।”
তিনি আরও জানান—৮ লাখ টাকা ফেরত দিলে নাকি তার স্বামীর পেনশন স্কিমের টাকা আবেদন করা যাবে বলেও তাকে জানানো হয়েছে।
উপকারভোগীদের অভিযোগ—টাকা দিই, তালিকা করি, চাল নেই, কিন্তু সঞ্চয় ফেরত নেই।
বলিপাড়ার নুমেউ মারমা, উমেসিং মারমা, মাচাইসিং মারমা ও হ্লায়ইনু মারমা বলেন—
“২০২২ সালে ভিজিডি কার্ড দেয়ার জন্য ৫০০ টাকা দিতে হয়। প্রতি মাসে ৩০ কেজি চাল নিয়েছি এবং ২৭০ টাকা সঞ্চয় দিয়েছি। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে টাকা ফেরত দেয়ার কথা ছিল। ডিসেম্বর হয়ে গেল—এখনো পাইনি। বিদ্যামনি পাড়া উপকারভোগী
সাসংতি ত্রিপুরা ও জেরিনা ত্রিপুরা বলেন—চেয়ারম্যান ‘এক সপ্তাহ পর’ বলে ঘুরাচ্ছেন। এক বছর হয়ে গেলেও টাকা ফেরত মিলছে না।
ব্যাংক কর্তৃপক্ষ—কোনও সেন্ট্রাল অ্যাকাউন্ট নেই
স্থানীয় সোনালী ও কৃষি ব্যাংক জানিয়েছেন—ভিডব্লিউবি–ভিজিডি সঞ্চয় তহবিলের জন্য কোনও অনুমোদিত বা যৌথ স্বাক্ষরিত সেন্ট্রাল অ্যাকাউন্ট নেই।
ডিজিটাল আইডি বন্ধ করে ‘লোভে’ ম্যানুয়াল পদ্ধতি!
বলিপাড়া ইউনিয়নের ডিজিটাল আউটসোর্সিং কর্মী চৌনয় মারমা বলেন—
“২০২১–২২ চক্রে ব্যাংক এশিয়ার ইন্ডোভিজ্যুয়াল অ্যাকাউন্ট ছিল ৪০০ উপকারভোগীর। পরে লোভে চেয়ারম্যান সেটি বন্ধ করে ম্যানুয়াল সিস্টেম চালু করেন।”
গ্রামের মানুষ—‘আমাদের টাকাই খেয়ে ফেলছে’
নাইন্দারী পাড়ার উপকারভোগীদের প্রতিনিধি চাইশৈপ্রু কারবারী বলেন—
“সরকার যেসব সুবিধা দেয়, দায়িত্বশীলরা সেই টাকা রাখে। আমরা বাজার–খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছি। এই টাকা আমাদের জরুরি সহায়তা ছিল।”
চেয়ারম্যানদের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে অভিযোগ
জিয়াঅং মারমা (বলিপাড়া) ও মুইশৈথুই মারমা রনি (রেমাক্রী) ২০১৬ ও ২০২২ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হন। স্থানীয়দের অভিযোগ—তারা নিজেদের দলীয় প্রভাব ব্যবহার করে স্বৈরাচারী আচরণের সঙ্গে জড়িত।
অন্যদিকে অংপ্রু ম্রো (থানচি সদর) ২০২২ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
চেয়ারম্যান অংপ্রু ম্রোর দাবি—আমরা টাকা ফেরত দিয়েছি
তিনি বলেন—
“২০২৩–২৪ চক্রের সব উপকারভোগীকে সঞ্চয়ের টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে।”
সচিব ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের জটিলতা
রেমাক্রী ইউনিয়নের সচিব উশৈ মারমা বলেন—
“তালিকা, বিতরণ, সঞ্চয়—সব চেয়ারম্যান এককভাবে করেন। আমাকে হস্তক্ষেপ করতে নিষেধ করা হয়।”
তিন্দু ইউপি চেয়ারম্যান ভাগ্য চন্দ্র ত্রিপুরা ঘটনাটি সত্য বলে স্বীকার করে বলেন—
“মহিলা বিষয়ক অফিসের গুটি চালের শিকার হয়েছি। দ্রুত টাকা ফেরত দেব।”
উপজেলা প্রশাসন—১ জানুয়ারির ভেতর টাকা ফেরতের আশ্বাস
মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আয়েশা আক্তার বলেন—
“থানচির অতিরিক্ত দায়িত্বে আছি—দুই উপজেলা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছি। এমরান হোসেনের হঠাৎ মৃত্যুর কারণে বিলম্ব হয়েছে। ১ জানুয়ারির মধ্যে ফেরত দেয়ার চেষ্টা চলছে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল-ফয়সাল বলেন—
“১ জানুয়ারি ২০২৬ তারিখে উপকারভোগীদের সঞ্চয় আমানত ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমি উপস্থিত থাকব।
রেমাক্রী ইউনিয়নের সচীব উশৈ মারমা বলেন, ভিজিডি কর্মসূচীতে সকল উপকারভোগীদের তালিকা ডুকুমেন্ট চেয়ারম্যান পকেটে নিয়ে যায়, ভিজিডি কর্মসূচীতে ইউনিয়ন কমিটিতে সদস্য সচীব হিসেবে আমি আছি কিন্তু তালিকা প্রনয়ন, বিতরণ সঞ্চয় গ্রহন, ব্যাংকের জমা করানো, সব কাজ করেন চেয়ারম্যান একা। তিনি একাধারে ঠিকাদার, মৌজা হেডম্যান,আওয়ামী লীগের উপজেলা যুগ্ন:সাধারণ সম্পাদক , ইউপি চেয়ারম্যান চার ক্ষমতা থাকায় গত ১০ বছর দাপতের সাথে ইউনিয়ন পরিষদকে নিজের একক পরিবার ভেবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে আমাকে নাগ গলাতে নিষেধ করেছে। এবং চেয়ারম্যানের আদেশ ছাড়া সরকারী কর্মকর্তা,
সাংবাদিকদের কোন তথ্য দিতে নিষেধ করেছেন।তার সাথে আরো হুমকি ও দিয়ে বলেন, যদি কোন প্রকার তথ্য প্রকাশ করেন,তাহলে চাকরি থেকে বহিষ্কার করে দিয়ে দিবো বললেন।
১হাজার ৬৭৪ জন হতদরিদ্র নারী আজ দিশেহারা। জীবনের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ নিশ্চিতে সরকার এবং প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা।

একজন ভুক্তভোগীর আর্তনাদ—
“আমরা বিচার চাই। আমাদের সঞ্চয়ের টাকা যেন আমাদের হাতে ফেরত দেওয়া হয়।

অনুগ্রহ করে এই পোস্টটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
© All rights reserved © 2025
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD